কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু
ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন নামিদামি ব্রান্ডের আটা, ময়দা,গুড়া মসলার প্যাকেটে করে অভিনব পদ্ধতিতে প্যাকেজিং করে হেরোইন রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করার কারখানায় অভিযান চালিয়েছে মডেল থানা পুলিশ। এ সময় দুটি কারখানা থেকে চারজন ও সরবরাহ করার সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারখানা দুটি থেকে ২কেজি ১০০ গ্রাম হিরোইন,হেরোইন প্রস্তুত এর কম্পোজিশন ব্লেন্ডিং করার জন্য ব্লেন্ডিং মেশিন, ইলেক্ট্রিক প্যাকিং মেশিন, ওজন মাপার ডিজিটাল মেশিন, বিভিন্ন ব্রান্ডের আটা-ময়দা, হলুদ- মরিচের গুড়ার ১০০০পিছ খালি প্যাকেট ও ৯৮ বান্ডিল ফ্লুয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আটি পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ এস আই মোঃ ইমরানের নেতৃত্ব মঙ্গলবার সকালে আটিবাজার ইউসিবি ব্যাংকের সামনে থেকে আটার প্যাকেটের ভিতরে হেরোইনের নিয়ে রাজধানীর দিকে যাওয়ার সময় মোঃআলী(২৬) ও মোঃ হাবিবুল ইসলাম রানা(৩০)কে আটক করা হয়। হেরোইন তৈরীর কারখানার খবর পেয়ে ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমীনুল ইসলাম,কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন সাহাব, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন অর রশীদসহ থানার একটি চৌকস টিম আটককৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুপুরে অভিযান চালিয়ে ঘাটারচর আরশিনগর লেক সিটি এলাকার এসডি মহলের ৪র্থ তলায় এবং আটিবাজারের সুজন হাউজিংয়ের একটি বাড়ির নিচতলায় হেরোইন প্যাকেজিংয়ের জন্য প্রস্তুত কারখানা থেকে মোঃ হেলাল (৪৫),বিপ্লব (২২),মোঃ বিল্লাল (২২),মোঃ শরিফুল ইসলাম (২০)কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২কেজি ১০০ গ্রাম হিরোইন,হেরোইন প্রস্তুত এর কম্পোজিশন ব্লেন্ডিং করার জন্য ব্লেন্ডিং মেশিন, ইলেক্ট্রিক প্যাকিং মেশিন, ওজন মাপার ডিজিটাল মেশিন, বিভিন্ন ব্রান্ডের আটা-ময়দা, হলুদ- মরিচের গুড়ার ১০০০পিছ খালি প্যাকেট ও ৯৮ বান্ডিল ফ্লুয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া কারখানার শ্রমিক হেলাল জানান, ১৮হাজার টাকার মাসিক বেতনে কাজ করেন তিনি। তারা কেবল মালিকের অর্ডারেই হেরোইন তৈরী ও প্যাকেট জাত করতেন। এসব হেরোইন কাচামাল কোথা থেকে আসতো বা কোথায় যেত তারা কিছুই জানেন না। তবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতেই মুলতঃ মসলা ও আটার প্যাকেটে মোড়ক জাত করেন তারা। তাদের মালিকের নাম জিজ্ঞাসা করলে জানাযায় তার নাম টোকাই আরিপ। তাকে কখনো কেউ দেখেনি। তার লোক এসে মাল দিয়ে যেতো আবার তৈরী হলে নিয়ে যেতো। এসব হেরোইন রাজধানীরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হতো। প্রতিটি হেরোইনের পুরিয়া ১৫০ টাকা করে বিক্রি হতো বলেও জানান কারখানার অন্য শ্রমিকরা এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমীনুল ইসলাম বলেন,শহর থেকে দূরে নিরিবিলি স্থানে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এভাবেই হেরোইনের কারখানা বসিয়ে মাদকের রমরমা ব্যবসা করে আসছিল একটি চক্র। এসব কারখানায় ব্রাউন সুগার বা হেরোইনের নতুন চালান আসলেই প্রথমে এক প্রকারের কেমিক্যাল মিশিয়ে তাপে গরম করা হয়। এরপর বেলেন্ডার মেশিনে গুড়ো করে তৈরী করা হয় নতুন আরেক ধরণের নেশাদ্রব্য। পরে তৈরী হওয়া নতুন হেরোইন ছোট ছোট পুরিয়া বানিয়ে সেগুলো বিভিন্ন মসলা ও আটার মোড়কে প্যাকেট জাত করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানায়, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি একটি চক্র কেরানীগঞ্জের ঘাটার চর ও আটি বাজার এলাকায় হেরোইন তৈরী করে তা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায বাজারজাত করে আসছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে দীর্ঘ পর্যবেক্ষন করে আজ মঙ্গরবার সকালে হেরোইন পাচার করার সময় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘাটারচর আরশিনগর লেক সিটি এলাকার এসডি মহলের ৪র্থ তলায় ও আটি বাজার এলাকার সুজন হাউজিং একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় তারা। এ সময় দুই কোটি টাকা মূল্যের ২ কেজি হিরোইন জব্দ করা হয়। কারখানা থেকে চার জন ও বিক্রি সাথে জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছেন তারা। তিনি আরও বলেন, চক্রটি ঢাকা শহরের ৫০ শতাংশ হেরোইনের যোগান দিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজধানীর উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণকে টার্গেট করেই চক্রটি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল বলেও জানান তিনি। তবে মুলহোতা সহ চক্রটির সকল সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।#
সম্পাদক ও প্রকাশক : শেখ আবুল কালাম আজাদ
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মোবাইল : ০১৯১২-২৮১৫২২ , ইমেইল: dailytungipara@gmail.com
© All rights reserved © 2021 DailyTungipara