--গোপালগঞ্জ জেলার সদর এলাকায় চাঞ্চল্যকর চা দোকানদার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মিজান @শাহিন’কে দীর্ঘ ২৯ বছর পর ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরন ও হত্যাসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
২। গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন তেলিগতি এলাকায় বসবাসকারী সেকেন্দার শেখ (৩০), পিতা-মৃত নজির শেখ নামক এক ব্যক্তি উক্ত এলাকার কাঠি বাজারে চায়ের দোকান দিয়ে তার জিবিকা নির্বাহ করতো। গত ১৪/০১/১৯৯৪ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ২০:০০ ঘটিকায় সেকান্দার প্রতিদিনের ন্যায় চা বিক্রি শেষে তার নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন কাঠি পশ্চিম পাড়া এলাকার কাঁচা রাস্তার উপর পৌছালে আনুমানিক রাত ২২:০০ ঘটিকায় উক্ত রাস্তার পাশে ৭/৮জন লোককে ফাকা জমির উপর বসে থাকতে দেখে সেকান্দার তাদের দিকে টর্চ লাইটের আলো ফেলে। অতঃপর টর্চ লাইটের আলোতে সে দেখতে পায় ৭/৮ জন লোক সেখানে বসে গাঁজা সেবন করছে। সেকান্দার তাদেরকে গাঁজা সেবনে মৌখিক ভাবে বাধা দিলে মোঃ মিজান ওরফে শাহিনসহ তার অন্যান্য সহযোগী মিলে সেকান্দারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সেকান্দারের বুকে, পেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সংবাদ দিলে গোপালগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ভিকটিম সেকান্দারের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ লাশ ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
৩। উক্ত হত্যাকাÐের পর মৃত সেকেন্দার শেখ এর ভাই এনায়েত শেখ বাদি হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০৮, তারিখ-১৪/০১/১৯৯৪ খ্রিঃ, ধারা- ১০৯/৩০২/৩৪ দÐ বিধি। মামলা রুজুর বিষয়টি জানতে পেরে হত্যাকাÐে জড়িত সবাই আত্মগোপনে চলে যায়। তাদের মধ্যে মোঃ মিজান ওরফে শাহিন উক্ত হত্যাকান্ডের পর কৌশলে মালয়েশিয়া চলে যায়। দীর্ঘদিন মালয়েশিয়া অবস্থান করার পর দেশে ফিরে আসে। পরবর্তীতে সে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার নাম ও পরিচয় গোপন করে লোকচক্ষুর আড়ালে চুপিসারে জীবনযাপন করতে থাকে।
৪। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত চাঞ্চল্যকর চা দোকানদার সেকান্দার শেখ হত্যাকাÐে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত আভিযানিক দল গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর চা দোকানদার সেকান্দার শেখ হত্যা মামলায় বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সাজা ওয়ারেন্টভুক্ত দীর্ঘ ২৯ বছর যাবৎ পলাতক আসামি মোঃ মিজান ওরফে শাহিন (৪৬), পিতা-মৃত ওয়াদুদ দফাদার, সাং-কাঠি, থানা-গোপালগঞ্জ সদর জেলা-গোপালগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে।
৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকাÐের সাথে তার সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর থেকে কৌশলে মালয়েশিয়া পলায়ন করে। পরবর্তীতে দেশে ফিরে আসে এবং গ্রেফতারের পূর্বে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার নাম ও পরিচয় গোপন করে আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।