সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন

ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী ওয়াসিম’কে নৃশংসভাবে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী দীর্ঘদিন পলাতক মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী জাহাঙ্গীর আলম @ আলমকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩
  • ২২৭ বার পড়া হয়েছে

কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু।

১। র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

২। গত ০৪ এপ্রিল ২০১৫ খ্রিঃ তারিখ ঢাকা জেলার দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানাধীন আগানগর এলাকার জনৈক শরিফ মিয়ার ২য় তলা টিনসেট বাড়ির একটি রুম হতে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা রুজু করে। পুলিশের তদন্তে নিহত ব্যক্তির নাম ওয়াসিম বলে জানতে পারে। পরবর্তীতে পুলিশ অধিকতর তদন্তে উক্ত হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে এবং উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম @ আলম (৪৫), ২।মোঃ আঃ বাতেন (৩৮), ৩। মোঃ পলক রহমান সাগর @ ডেঞ্জার সাগর (১৯), ৪। পাপ্পু (২০) ও ৫। কিশোর অপরাধী মোঃ সজিব (১৬/১৭)’দের চিহ্নিত করে এবং তাদের বিরুদ্ধে গত ০৭/১১/২০১৬ খ্রিঃ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন।

৩। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য এবং আসামী মোঃ পলক রহমান সাগর @ ডেঞ্জার সাগর ও কিশোর অপরাধী মোঃ সজিব এর স্বীকারোক্তিতে উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হয়। অতঃপর গত ১০/০২/২০২২ খ্রিঃ তারিখ বিজ্ঞ আদালত মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, আঃ বাতেন, পলক রহমান ও পাপ্পু’দেরকে উক্ত ওয়াসিম হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেন। আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও পাপ্পু দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় বিজ্ঞ আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু করেন।

৪। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য ১১ মে ২০২৩ তারিখ আনুমানিক ভোর ০৫:০০ ঘটিকায় র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী ঢাকার রামপুরা থানাধীন বনশ্রী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী ওয়াসিম হত্যা মামলার মূল পরিকল্পনাকারী দীর্ঘদিন পলাতক মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী জাহাঙ্গীর আলম @ আলম (৫২), পিতা- মৃত আহাদ বক্স, সাং- জিনজিরা নামাবাড়ী, থানা- কেরানীগঞ্জ মডেল, জেলা- ঢাকা’কে গ্রেফতার করে। এসময় তার নিকট থেকে ০১টি মোবাইল ফোন নগদ- ১,১০০/- (এক হাজার একশত) টাকা উদ্ধার করা হয়।

৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম ওয়াসিম ও আসামীরা পরস্পর বন্ধু ছিল। তারা সবাই একই সঙ্গে চলাফেরা করত। উক্ত হত্যার পূর্বে ওয়াসিম জাহাঙ্গীর’কে তাদের ক্লাব থেকে বের করে দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম ও ওয়াসিম এর মধ্যে মনোমালিন্য ও বিরোধের সৃষ্টি হয়। উক্ত বিরোধের জেরধরে জাহাঙ্গীর ওয়াসিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। অতঃপর জাহাঙ্গীর ওয়াসিমকে হত্যা করার জন্য বাতেনের সঙ্গে পরিকল্পনা করে ও ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করে। জাহাঙ্গীর আলমের পরিকল্পনা অনুযায়ী বাতেন, সজিব, পাপ্পু ও পলক রহমান সাগর @ ডেঞ্জার সাগর মিলে ওয়াসিমকে হত্যার তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করে।

৬। অতঃপর গত ০৩/০৪/২০১৫ তারিখ দুপুর বেলা গ্রেফতারকৃত আসামী জাহাঙ্গীর আলম এর পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়াসিমকে হত্যার জন্য সজিব ও পলক রহমান সাগর @ ডেঞ্জার সাগর তাদের নির্ধারিত স্থান ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আগানগর বাঁশপট্টী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২, ঢাকা স্টেশনের পিছনে জনৈক শরিফ মিয়ার ২য় তলা টিনসেট বাড়ির একটি রুমে অবস্থান করে। আসামী বাতেন ও পাপ্পু বাবু বাজার ব্রিজ হতে ওয়াসিম’কে উক্ত স্থানে ডেকে এনে রুমের মধ্যে আটক করে রাখে।

৭। পরদিন ০৪/০৪/২০১৫ তারিখ রাত আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকায় আসামী জাহাঙ্গীর আলম এর নির্দেশে বাতেন, পলক, সজিব ও পাপ্পু হত্যার উদ্দেশ্যে ওয়াসিমের হাত-পা, মুখ বেঁধে ফেলে এবং গরু জবাই করার বড় ছোরা দিয়ে ওয়াসিম’কে জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায় বলে জানা যায়।

৮। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর