১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া এলাকায় ভিকটিম হোসাইন মোহাম্মদ জিলান (২৩) তার পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিল। ঘটনার পূর্ব হতে ভিকটিমের পরিবারের সাথে আসামি আব্দুল্লাহ আল মিজু (৩০), পিতা- গিয়াস মিয়া, সাং- দস্তরমুড়ি, থানা- কুলাউড়া, জেলা- মৌলভীবাজারের সাথে পূর্ব বিরোধ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলমান ছিল। পূর্বের মামলার জের ধরে মিজুসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম ও তার পরিবারের উপর সর্বদা আক্রোশ্বানিত থাকে এবং ভিকটিমসহ তার পরিবারের লোকজনকে খুন করবে বলে হুমকি প্রদান করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৩ জুলাই ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে ভিকটিম জিলান তার ছোট ভাইকে কুলাউড়া বাসস্ট্যান্ডে পৌছে দেয়ার জন্য রওনা করে। ঘটনার দিন আনুমানিক সন্ধ্যা ০৬.৫০ ঘটিকায় কুলাউড়া পৌরসভাধীন দক্ষিণ বাজারস্থ আয়েশা টেলিকমের সামনে পৌছা মাত্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামি মিজুসহ আরো ১৩-১৪ জন আসামি দলবদ্ধভাবে একত্রিত হয়ে ভিকটিম হোসেন মোহাম্মদ জিলানকে দা, চাপাতি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ঘটনার একপর্যায়ে রাস্তায় চলাচলরত লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। অতঃপর উপস্থিত লোকজন ভিকটিম জিলানকে উদ্ধার করে কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরবর্তীতে গত ০৭ জুলাই ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাতে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
৩। উক্ত ঘটনায় মৃত জিলানের বাবা মোঃ আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড় থানায় চাঞ্চল্যকর হোসাইন মোহাম্মদ জিলান হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত আব্দুল্লাহ আল মিজু সহ ০৯ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০৫, তাং-০৯/০৭/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/৪৪৮/৩০২/১১৪/৩৪ দন্ড বিধি। উক্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামী আব্দুল্লাহ আল মিজু’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অধিনায়ক র্যাব-১০ বরাবর একটি অধিযাচনপত্র প্রেরণ করেন। উক্ত অধিযাচনপত্রের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর জিলান হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
৪। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২০ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ০৮:১০ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানাধীন বসুন্ধারা আবাসিক এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে উল্লেখিত মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া এলাকায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে চাঞ্চল্যকর জিলান হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল মিজু (৩০), পিতা- গিয়াস মিয়া, সাং- দস্তরমুড়ি, থানা- কুলাউড়া, জেলা- মৌলভীবাজার’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামী উক্ত হত্যাকাণ্ডে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর হতে রাজধানীর ভাটারাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।