সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫ অপরাহ্ন

হবিগঞ্জ জেলার লাখাই এলাকায় ক্লুলেস আমজাদ হোসেন নয়ন হত্যাকান্ড ও ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল এলাকায় যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় গৃহবধূকে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত পলাতক প্রধান ০২ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০

কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা ইমরান হোসেন ইমু
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪
  • ৬৭ বার পড়া হয়েছে

 

 

১। র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং অপহরন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ, বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতারে র‌্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

 

২। গত ০৮ মে ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানাধীন মোড়াকরি এলাকায় বসবাসরত আমজাদ হোসেন নয়ন (৪৭) নামক এক ব্যক্তির নিখোঁজের ঘটনা ঘটে। অতঃপর নিখোজের পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকে। অতঃপর গত ১১ মে ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ লাখাই থানা পুলিশ লাখাই এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ডিউটিতে নিয়োজিত থাকাকালীন জানতে পারে যে, লাখাই থানাধীন মোড়াকরি এলাকার পিলখানা নামক একটি হাওরে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পঁচা-গলা অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তির লাশ পাওয়া গিয়েছে। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর পুলিশ দুপুর আমুনামিক ১৪:০৫ ঘটিকায় ঘটনাস্থলে গিয়ে উক্ত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় উদ্ধার করতঃ সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

 

৩। উক্ত ঘটনার লাখাই থানায় কর্মরত এসআই মৃদুল কুমার ভৌমিক বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০৯, তারিখ-১৩/০৫/২০২৪ খ্রিঃ ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ড বিধি। অতঃপর লাখাই থানা পুলিশ উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের শনাক্ত এবং তাদের অবস্থান নিশ্চিৎ করতঃ আসামিদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অধিনায়ক র‌্যাব-১০ বরাবর একটি অধিচাযনপত্র প্রেরণ করেন।

 

৪। উক্ত অধিযাচনপত্রের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর উক্ত একটি আভিযানিক দল গতকাল ১৬ মে ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ২০:২৫ ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই এলাকায় চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস আমজাদ হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত পলাতক অন্যতম প্রধান আসামি মোঃ ফারুক মিয়া (২৫), পিতা-আওয়াল মিয়া, মাতা-জোসনা বেগম, সাং-পশ্চিম বুল্লা, থানা-লাখাই, জেলা-হবিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে।

 

৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামি ফারুক তার মা, বোনসহ ০৫ জন মিলে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমজাদকে হত্যা করে। পরবর্তীতে আমজাদের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে হাত-পা বেঁধে বস্তাবন্দী করে লাখাই থানাধীন মোড়াকরি এলাকার পিলখানা নামক হাওরে গর্ত করে মাটিতে পুতে রাখে।

 

৬। অপরদিকে গতকাল একই তারিখ রাতে র‌্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং র‌্যাব-১৪ এর সহযোগীতায় নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল মডেল থানার মামলা নং-১৫ তারিখ-১৩/০৫/২০২৪ খ্রিঃ; ধারা-২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী-২০২০) এর ১১(ক)/৩০; যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে ০৩ (তিন) মাসের অন্তঃসত্ত¡া গৃহবধু রেখা আক্তার’কে হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি ভিকটিম রেখার স্বামী মোঃ তাইজুল ইসলাম লিমন (২৩), পিতা-মোঃ আজিজুল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ সুরাইয়া খাতুন, সাং-বারুনাকান্দা, থানা-নান্দাইল মডেল, জেলা-ময়মনসিংহ‘কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি জানায় অটোরিক্সা কেনার জন্য ভিকটিমের পরিবারের নিকট হতে দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় ভিকটিম রেখা আক্তারকে আসামি তাইজুল তার মা ও বাবা মিলে শারিরীক নির্যাতন ও শ্বাররোধ করে হত্যা করে। অতঃপর হত্যার উদ্দেশ্য আড়াল করতে ও লাশ বেওয়ারিশ বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের নিজ উপজেলা হাসপাতালে না নিয়ে পাশ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভিকটিম রেখার লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

 

৭। গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর