কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু।
ঘরবাড়ি-মন্দিরে ভাংচুর স্বর্ণালংকারসহ নগদ অর্থ লুট ফিল্মি স্টাইলে হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ
জরুরী সেবা ৯৯৯ কল করেও পুলিশ আসতে গড়িমসি বুধবার (১৫ মে) কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের দিঘিরপাড় এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়িঘর ও মন্দির ভাংচুর,লুট, হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।
দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা দলিল লেখক সমির চন্দ্র ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, বুধবার রাতে প্রতিদিনের মতো আমি ও আমার ছোট ভাই প্রসেনজিৎ ঘোষ কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। ফিরতি পথে দিঘিরপাড় লোহার ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে রাত আনুমানিক ১০.০০টা দিকে লোহার ব্রীজের পাশে সোহাগ মজুমদারের সাউন্ড সিস্টেমে দোকানে উচ্চস্বরে গান বাজানো হচ্ছিলো। পরবর্তীতে আমি ও আমার ভাই সাউন্ড সিস্টেমের দোকানে কাজ করা অনিক মজুমদারকে উচ্চস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করে বাসায় চলে আসি। তবে রাত আনুমানিক ১১.০০ টা দিকে পাশের এলাকার বাসিন্দা বিপুল চন্দ্রের নেতৃত্বে দেশীয়অস্র, হকিস্টিক ও লাঠিসহ সদলবলে হামলা চালায়। আমরা সেই রাতেই জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করি। কিন্তু পুলিশ আমাদের রাতে কোনো ধরনের সহযোগিতা করেননি। তিনি আরো বলেন, পুলিশ না আসায় আমরা পুনরায় কল করি তখন মুঠোফোনে পুলিশ আমাদের কাছে জানতে যায় যে ঝামেলা বেশি গুরতর কি না!
সমীর চন্দ্র ঘোশের ছোট ভাই প্রসেনজিৎ ঘোষ জানান, বিপুল চন্দ্রের নেতৃত্বে আসা সন্ত্রাসী গ্রুপটি তাদের বাড়ির মন্দির ও বসত ঘরের জানালার গ্লাস ভাংচুর করে এবং ঘর থেকে বাইরে আসতে হবে। এসময় প্রসেনজিৎ ঘোষ তাদের থামানোর চেষ্টায় ঘর থেকে বের হলে তাকে অকথ্য গালিগালাজ করে। এবং হত্যার চেষ্টায় অনিক মজুমদার তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর কোপ দেয়। তখন হাত দিয়ে কোপ ফেরানোর চেষ্টা করলে বাম হাতের উপরে কোপ লাগে।
এসময়, তাদের বাড়ীতে বেড়াতে বোন জামাই গোবিন্দ অধিকারী (৫০) প্রসেনজিৎ ঘোষকে হামলাকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে গেলে ভরত মজুমদার গোবিন্দ অধিকারীকে এলোপাথারী কিলঘুষি মেরে আহত করে।
প্রসেনজিৎ ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা এসময় বসত ঘরে প্রবেশ করে ঘরের ভিতরে থাকা সুকেসের গ্লাগ সহ বিভিন্ন তৈসজপত্র ভাংচুর করে। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, সজীব মজুমদার আমার বোন শিখা রানী অধিকারীর শ্লীলতাহানী করে আমার বোনের গলায় থাকা ১,৫০, ০০০ লক্ষ টাকা মূল্যের দেড় ভড়ি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। বিপুল চন্দ্র মজুমদার সুকেসের ড্রয়ারে থাকা আমার জমি রেজিষ্টির নগদ ২,০০,০০০/- (দুইলক্ষ টাকা) নিয়া নেয়। তারা সর্বমোট আমাদের প্রায় ৪ লক্ষ টাকার উপরে লুট ও আর্থিক করে করে। তখন আমাদের ডাক- চিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীরা আমাদেরকে বিভিন্ন ভয়ভীতি সহ প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে চলে যায়। পরবর্তীতে আমার বড় ভাইয়ের ছেলে শান্ত ঘোষ, আমার বড় খালাতো ভাইয়ের ছেলে গোপাল ঘোষ আমাকে চিকিৎসার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল ঢাকায় নিয়া যায়। ডাক্তার আমার বাম হাতে ০৬ টা সেলাই দেয়। আমার বোন জামাই ও আমার বোন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহন করে।
সমীর ঘোষ ও প্রসেনজিৎ ঘোষ এর মা স্বরসতী ঘোষ বলেন, আমরা জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। সন্ত্রাসী বাহিনী আমার সন্তানদের আজকে মেরে ফেলতো। তারা আমার সন্তানদের রাস্তায় পেলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গেসে। বাড়িতে এসে এরা মন্দিরে হামলা করেছে। ঘরে আমাদের উপর হামলা করেছে, টাকা পয়সা লুট করেছে। আমরা পুলিশকে কল করলেও পুলিশ তখন আসে নাই। আমি আমার সন্তানদের প্রাণ ভিক্ষা চাই।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রসেনজিৎ ঘোষ বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় বিপুল চন্দ্র মজুমদার (৪৫), অনিক মজুমদার (৩০), সজীব মজুমদার (২১), ভরত মজুমদার (৫৫) সহ অজ্ঞাতনামা আর ৭/৮ জনকে বিবাদী করে একটি অভিযোগ করেন বলে জানা যায়।
এদিকে এই মারামারি ঘটনাটি জানতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত শরজিৎ কুমার ঘোষ সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনে ফোন দিলে ফোন ধরেন না তিনি ব্যস্ত ব্যস্ত দেখায়।