১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব নিয়মিত জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, অস্ত্রধারী অপরাধী, মাদক, ছিনতাইকারীসহ ডাকাতির বিরুদ্ধে ব্যপক অভিযান চালিয়ে আসছে। এছাড়া প্রতারণা ও জালিয়াতি দমন র্যাবের একটি গুরূত্বপূর্ণ ও চলমান অভিযান। র্যাবের এই অভিযান দেশের সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
২। গত ২৭/০৫/২০২৩খিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ০২:০০ ঘটিকায় দেশীয় অস্ত্রসহ অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ জনের একটি ডাকাত দল ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন বাখুন্ডা বাজারের নৈশ্য প্রহরীদের উপর অতর্কিত হামলা করে। অতঃপর ডাকাতরা নৈশ্য প্রহরীদের দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদের চোখ, মুখ, হাত ও পা বেঁধে মারধর করে আহত অবস্থায় সবাইকে বাজারের নতুন গলিতে বেঁধে রাখে। পরবর্তীতে উক্ত ডাকাত দল বাজারের স্বর্ণের দোকান, মুদি দোকান, ইলেক্ট্রনিক্সের দোকনসহ বেশকয়েকটি দোকানের বিপুল পরিমান সম্পদ ডাকাতি করে পলিয়ে যায়।
৩। উক্ত ঘটনায় ডাকাতি হওয়া দোকানের মালিকরা বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর- ১১৪, তাং- ২৯/০৫/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড।
৪। ইতোমধ্যে ডাকাতির ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) উক্ত ডাকাতির সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।
৫। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি অভিযানিক দল রাজধানীর লালবাগ থানাধীন ইসলামবাগ এলাকা হতে বহুল আলোচিত ফরিদপুরের বাখন্ডা বাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সর্দার ১। মোঃ ইসমাইল সরদার @ লিটন (৩৮), জেলা- পটুয়াখালী’কে গ্রেফতার করে। ডাকাত সর্দার লিটন এর দেয়া তথ্যমতে গতকাল ০৩ জুলাই ২০২৩খ্রিঃ তারিখ ঢাকার শ্যামপুর, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান পরিচলান করে ২। মোঃ মামুন সরদার (৩০),জেলা- মাদারীপুর ও তার সহযোগী ৩। শেখ জাহাঙ্গীর (৫২), জেলা- ঢাকা, ৪। জলিল @ সম্পদ বেপারী (৬১), জেলা- ফরিদপুর, ৫। রুবেল মোল্লা (৩৪), জেলা- শরীয়তপুর ও ৬। মোঃ হারুন (৫৫), জেলা- ফরিদপুর’দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের নিকট হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত কাটার (তালা কাটায় ব্যবহৃত), রুপার অলংকার ও ১৫ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
৬। গ্রেফতারকৃত ডাকাত মোঃ মামুন ও তার সহযোগীদের দেয়া তথ্যমতে অদ্য ০৪ জুলাই ২০২৩খ্রিঃ তারিখ রাতে র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল মাদারীপুর জেলার সদর থানাধীন কেন্দুয়া বাজিদপুর ও রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ডাকাতির সাথে জড়িত ৭। মোঃ সুমন মাতুব্বর (৪৫) ও ৮। মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৩), উভয় জেলা- মাদারীপুর’দেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের নিকট হতে ডাকাতির জন্য ব্যবহৃত ককটেল তৈরির সালফার ও ০২টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
৭। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা গত ২৭/০৫/২০২৩খ্রিঃ তারিখ ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন বাখন্ডা বাজার ডাকাতির সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা বেশ কিছুদিন যাবৎ ঢাকা, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির অভিপ্রায়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ ডাকাতি করে আসছিল। তারা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বরিশাল-ফরিদপুর, মাওয়া- গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন আন্তঃজেলা মহাসড়ক এর বিভিন্ন এলাকায় বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন থামিয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মানুষের নিকট হতে টাকা পয়সা স্বণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল। ডাকাত সুমন এর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি ও হত্যা চেষ্টাসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে। ডাকাত মামুন সরদার এর বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারামারিসহ ০৩টি মামলা রয়েছে। ডাকাত সর্দার মোঃ ইসমাইল সরদার @ লিটন এর বিরুদ্ধে ০২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ডাকাত মোঃ হারুন বেপারী এর বিরুদ্ধে ০২টি ডাকাতি ও ০১টি অপহরণ মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
৮। গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।