১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং অপহরন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ, বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
২। বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন চর ডাইয়া এলাকায় বসবাসকারী পেশায় মুদি দোকান্দার ভিকটিম আরিফ জমাদ্দার (৩৫), পিতা- মৃত আবদুল জলিল জমাদ্দারের সাথে গ্রেফতারকৃত আসামি আবুল কাশেম ফরাজী এর পূর্ব হতে পারিবারিকভাবে বিরোধ চলছিল। উক্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেমসহ ১৬-১৭ জন মিলে আরিফকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল ১৬/১০/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক দুপুর ১৪:০০ ঘটিকায় আরিফ দুপুরে খাবার খেয়ে ও যোহরের নামাজ পড়ে উল্লেখিত মেহেন্দিগঞ্জ থানাধীন চর ডাইয়া এলাকার মসজিদের পাশে তার পরিচালিত মুদি দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা করে। অতঃপর তার দোকানে গিয়ে দোকান সাটার খোলে দোকানে বসার সাথে সাথেই পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা আবুল কাশেম ও তার আরো ১৬-১৭ সহযোগীরা মিলে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (দা, লোহার রড ও লাঠিসোটা ইত্যাদি) নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আরিফের উপর অতর্কিত আক্রমন করে। অতঃপর প্রথমে গ্রেফতারকৃত আবুল কাশেম তার হাতে থাকা দা দিয়ে আরিফের মাথায় একাধিক কোপ দেয়। পরবর্তীতে আবুল কাশেমসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা তাদের কাছে থাকা দা দিয়ে আরিফের হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারিভাবে কুপাতে থাকে ও লোহার রড দিয়ে পেটাতে থাকে। যার ফলে আরিফ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং গুরুতর রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয়। আরিফের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা দ্রæত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আরিফের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় আরিফকে গুরুতর রক্তাক্ত আহত অবস্থায় স্পীড বোডযোগে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। উক্ত স্পীড বোডে করে হাসপাতালে যাওয়ার সময় আরিফ তার পরিবারের লোকজনদের ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন। পরবর্তীতে গতকাল ১৬/১০/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক বিকাল ০৫:৩০ ঘটিকায় আরিফ উক্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
৩। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐের বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত হত্যাকাÐে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।
৪। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অদ্য ১৭ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ভোর ০৪:৩০ ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার কোতয়ালী থানাধীন সদরঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্যকর আরিফ জমদ্দারকে দা দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাকাÐের ১২ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাÐের মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক প্রধান আসামি মোঃ আবুল কাশেম ফরাজী (৬৭), পিতা-আঃ রব ফরাজী, সাং-বাংলা বাজারের পাশে, থানা-মেহেন্দীগঞ্জ, জেলা-বরিশাল‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।