কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু।
ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সড়কে ডিবি পরিচয় দিয়ে বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের বহনকারী প্রাইভেটকার/হাইয়ে গাড়ীকে ডিবি পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে জোরপূর্বক তাদের নিকট থাকা বিদেশী মুদ্রা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও বিভিন্ন প্রকার মালামাল ছিনিয়ে ডাকাতি করে আসছিল একদল ডাকাত চক্র।
দু টি ডাকাতি মামলার ভিত্তিতে ৪ ডাকাত দলের সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সংবাদ জানান কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবির তিনি জানান,
এ ডাকাত চক্রটি মূলত ঢাকা থেকে দূরবর্তী বিভিন্ন জেলা যেমন- ময়মনসিংহ, বরিশাল, বাগেরহাট থেকে ডিএমপি ঢাকাতে এসে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের এয়ারপোর্ট থেকে আগত গাড়ীকে টার্গেট করত চক্রটি। তারা টার্গেটকৃত গাড়ীকে অনুসরন করে ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ফাঁকা জায়গায় পিছন থেকে এনে গাড়ীকে চাপ দিয়ে থামিয়ে দেয় এবং উক্ত ডাকাতচক্র তাদেরকে ডিবি পরিচয় দিয়ে বিদেশ ফেরত যাত্রীদের নিকট অবৈধ মালামাল আছে বলে তল্লাশীর কথা বলে জোরপূর্বক মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে ডাকাতি করত এ চক্রটি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ইং- ২ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখ রাত্র অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় ফরিদপুর জেলার দেলোয়ার মাতব্বর তার মালেয়শিয়া ফেরত ছেলেকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করে ফরিদপুরে নিয়ে আসার সময় দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের রাজেন্দ্রপুর ফ্লাইওভার এর উপরে পথরোধ করে ডাকাতি করে। ঐ একই ডাকাত দল পরবর্তীতে গত ইং ০৫ মার্চ ২০২৩ইং তারিখ রাত্র অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় ঢাকা-মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের রাজেন্দ্রপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে হতে বাদী মামুন মিয়া সৌদি আরব ফেরত তার বোন, ভাগিনাদের নিয়ে ফরিদপুর যাওয়ার পথে ডাকাতরা তাদের গাড়ী থামিয়ে ডিবি পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে তাদের নিকট থাকা বিভিন্ন প্রকার বিদেশী স্বর্ণালংকার ও মালামাল ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনা দুটির প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দুইটি ডাকাতি মামলা রুজু হয়।
এই দুটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য আসাদুজ্জামান, পিপিএম (বার), পুলিশ সুপার, ঢাকা মহোদয় তাৎক্ষণিক নির্দেশ প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ক্রাইম এন্ড অপস্ (দক্ষিণ) এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং শাহাবুদ্দিন কবীর, বিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর নেতৃত্বে একটি স্পেশাল তদন্ত টিম দূর্ধর্ষ এই ক্লু-লেস ডাকাতির মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। ঘটনাস্থল হতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনাস্থল হতে সন্ধিগ্ধ মোবাইল ফোন সনাক্ত করতঃ যাচাই বাছাই করে সন্ধিগ্ধ আসামীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হই। প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় আসামীরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইলগুলো বন্ধ করে বিভিন্ন জেলায় পালিয়ে গেছে। শাহাবুদ্দিন কবীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কেরাণীগঞ্জ সার্কেল এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের একটি চৌকস টিম ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ডাকাত সর্দার ১. সুমন মিয়া (২৫), কে ময়মনসিংহ নান্দাইল হতে ২. মোস্তফা (৩২) কে ময়মনসিংহের ত্রিশাল হতে ৩. মোঃ আলামিন (২৫) তে রামপুরা, ডিএমপি হতে ৪. শারমিন আক্তার (৩৩) কে কোতয়ালী, বরিশাল হতে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং তাদের নিকট হতে স্বর্ণালংকার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ধৃত আসামীরা সকলে সক্রিয় ডাকাতদলের সদস্য। সংঘবদ্ধ ডাকাতচক্রের ধৃত সদস্য ও পলাতক ডাকাতরা ইতিপূর্বে ডিবি পরিচয় ব্যবহার করে ঢাকা মাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ডাকাতি করেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। বিজ্ঞ আলাদতে প্রেরন করা হয়েছে। আসামীদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি খয়ে যাওয়া বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও মালেশিয়ান রিংগিত উদ্ধার করা হয়।