মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন

ঈদে ব্যবসা ভালো হওয়ায় কেরানীগঞ্জে গরুর খামারের সংখ্যা বাড়ছে

কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমু
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩
  • ২১৬ বার পড়া হয়েছে

কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা মোঃ ইমরান হোসেন ইমুঃ

ঈদুল আযহার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঈদ সামনে রেখে কেরানীগঞ্জের খামারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদে ব্যবসা ভালো হওয়ায় প্রতি বছর কেরানীগঞ্জ উপজেলায় গরুর খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে কেরানীগঞ্জে গরুর খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুন। ২০১৯ সালে নিবন্ধিত গরুর খামারের সংখ্যা ছিল প্রয় সাড়ে ৫শ আর এবছর নিবন্ধিত গরুর খামারের সংখ্য প্রায় ১ হাজার। এছাড়া কয়েক হাজার পরিবার রয়েছে যারা পারিবারিকভাবে গরু লালন পালন করেন। আর এসব গরু অধিকাংই খামারে বিক্রি হয়ে যায়। অন্যদিকে দানাদার গো খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় এবার কোরবানির গরু-ছাগলের মূল্য অন্যান্য বারের তুলনায় বেশী। জানাযায়, ঈদুল আযহা উপলক্ষে কেরানীগঞ্জে দুই ভাবে পশু প্রস্তুত হয়ে থাকে। খামারে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে পশু মোটা তাজা করন আর বাসাবাড়িতে গৃহস্থলী পদ্ধতিতে পশু পালন। এবারের ঈদকে সামনে রেখে কেরানীগঞ্জে প্রায় ১২ হাজার গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ক্ষতিকর কেমিক্যাল বা ওষুধ ব্যবহার না কওে ্রপ্রকৃতিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এসব গরু পালন করা হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে নিয়মিত মনিটরিং এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করায় খামারিরাও এ বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। ফলে নিরোগ ও পুষ্টিকর মাংসের জন্য কেরানীগঞ্জের গরুর চাহিদা বাড়ছে। কেরানীগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন শ্রেণীর লোক আগে থেকেই খামারে গরু কিনে রাখেন। এর ফলে কেরানীগঞ্জে খামারীদের বেশীর ভাগ গরু খামারেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। ভাগনা এলাকার অঞ্জন এন্ড শুভ এগ্রো ফার্মের মালিক শুভ বলেন, প্রথম তিনি সৌখিন ভাবে কয়েকটি গরু নিয়ে খামার শুরু করেন। ব্যবসা ভালো হওয়ায় এখন তিনি বাণিজ্যিকভারে খামারে গরু পালন শুরু করেছেন। তিনি প্রকৃতিক উপায় এবার ৩০ টি গরু মোটা তাজা করে কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করেছেন। প্রাকৃতিক উপায় পুষ্টিকর কাবার খাইয়ে গরু মোটা তাজা করার কারণে তার সবকটি গরু খামারেই বিক্রি হয়ে গেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, খড়কুটা, গমের ভুসি, ধানের কুড়া, ভুট্টা, মুগ ও লাও দিয়ে পাকানো জাউ এবং বিভিন্ন ধরনের ঘাস, কলমিলতা খাবার হিসেবে গরুকে দেয়া হয়। গরুর কোনো সমস্যা হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে পশু ডাক্তার এসে যথাযথ চিকিৎসা দেন। কোরবানীর গরু ক্রেতা কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন খামারে কোরবানির গরু ক্রয় সম্পর্কে বলেন, পশুর হাটে গিয়ে কোরবানির গরু কেনা বিরক্তিকর অনেক সময় সঠিক গরু বাছাই করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া নগদ টাকা গরুর হাটে নিয়ে যাওয়া ঝুঁকি পূর্ণ। তাই জেনে শুনে ভালো গরু খামার থেকে কিনে খামারে রেখে দিয়েছি। কোরবানীর ১ দিন আগে বাসায় এনে ঈদের ২য় দিন কোরবানী দিব। এছাড়া খামার থেকে সরাসরি কোরবানির গরু কেনাটা নিরাপদ। প্রতিবছর তিনি কেরানীগঞ্জের কোনো না কোনো খামার থেকে কোরবানির গরু কিনে থাকেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনছুর আহমেদ বলেন, ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় এক হাজার খামারে ১০৫১৪ টি ষাড়, ২১৫ টি বলদ, ৫০০ টি গাভী, ১২৫ টি মহিষ, ৮২০ টি ছাগল, ২২৮ টি ভেড়া, অন্যান্য ৩০ টি পশু সহ মোট ১২৪২৫ টি পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এবছর কেরানীগঞ্জে কুরবানির পশূর চাহিদা ২৯১২০ টি। কেরানীগঞ্জের অনেক খামারী ঢাকার বাহিরে ষাড় হৃষ্ঠপুষ্ট করে কুরবানির ১০/১২ দিন আগে তাদের খামারে নিয়ে আসে,তাতে আশা করছি আমাদের যে ঘাটতি আছে তা পূরণ হবে ইনশাআল¬াহ। তাছাড়াও আমরা অফিস থেকে নিয়মিত খামার পরিদর্শন করছি। খামারিদের প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে গরু পালন করার পরামর্শ দিচ্ছি, উঠান বৈঠক,জনসচেতনতা মুলক প্রোগ্রাম করছি। পাশাপাশি বিভিন্ন ওষুধের দোকানগুলো নিয়মিত মনিটরিং করছি যাতে তারা কোন ভেজাল, অনুনোমদিত ড্রাগস বিক্রয় করতে না পারে। কেরানীগঞ্জ উপজেলা কর্তৃক অনুমোদিত কুরবানির পশুর হাট গুলোতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে,কোন কারণে বাজারে পশু অসুস্থ হযে গেলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে। খামারির কাছে থেকে ক্রেতার হাতে সুস্থ পশু পৌঁছে দিতে মেডিকেল টিম সবসময় কাজ করছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর