১। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই দেশের সাবির্ক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরণের অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, সংঘবদ্ধ অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী এবং অপহরন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ, বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতারে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ১১ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন অম্বিকাপুর এলাকায় পূর্ব শত্রæতার জের ধরে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে অধ্যায়নরত কলেজ ছাত্র আসাদুজ্জামান নূর @ তুরাগ (২২)’কে বিরোধ মীমাংসার কথা বলে আনুমানিক বিকাল ১৬:৩০ ঘটিকায় তার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তুরাগের পরিবারের লোকজন তাকে ফোন দিয়ে কোন সারা না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। খোঁজিখুঁজি করার এক পর্যায় তুরাগের বড় ভাই মোঃ আবুল কালাম আজাদ স্থানীয় লোকজনদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত এলাকার মোঃ টিপু খা (৩৫)সহ ৯-১০ জন লোক মিলে একটি বিচ্ছিন্ন হাত নিয়ে উল্লাশ করছে এবং নিকটবর্তী গোবিন্দপুর এলাকার একটি মেহগনি ও কলা বাগানে অজ্ঞাত একজন ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর ভিকটিমের বড় ভাই স্থানীয় লোকজন নিয়ে ঘটনার দিন ১১/১০/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক সন্ধ্যা ১৮:৪০ ঘটিকায় উল্লেখিত মেহগনি ও কলা বাগানে গিয়ে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত এবং বাম হাতের কনুইয়ের একটু উপর হতে হাত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ভিকটিম তুরাগের লাশ দেখতে পায় এবং বিচ্ছিন্ন হাতটি লাশের আশপাশের কোথাও খুজে পাওয়া যায়নি। অতঃপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ লাশ ময়না তদন্তের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
৩। উক্ত হত্যাকান্ডের পর মৃত আসাদুজ্জামান নূর @ তুরাগের পিতা মোঃ আলাউদ্দিন হাওলাদার (৬৭) বাদি হয়ে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানায় মোঃ টিপুসহ ০৭ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৩২, তারিখ-১৩/১০/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-১৪৩/৩২৬/৩০২/২০১/৩৪ দÐ বিধি। মামলা রুজর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত হত্যাকাÐে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
৪। নৃশংস এই হত্যাকান্ডটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় দেশব্যপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐের বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত হত্যাকাÐে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
৫। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল অদ্য ০৬ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন করিমপুর এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে ফরিদপুরের অম্বিকাপুর এলাকায় চাঞ্চল্যকর কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে কলেজ ছাত্র আসাদুজ্জামান নূর @ তুরাগ’কে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার পলাতক আসামি মোঃ টিপু খা (৩৫), পিতা-মোঃ হালিম খা, সাং-ধুলদী, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ফরিদপুর’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামি উক্ত হত্যাকান্ডে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।