শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন

মুন্সিগঞ্জ গজারিয়ায় রোকেয়া বেগম হত্যা মামলার প্রধান আসামী মন্জুর গ্রেফতার

কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা
  • আপডেট সময় বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১২৪ বার পড়া হয়েছে

১। র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণ ও প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সংগঠিত চাঞ্চল্যকর এবং আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র‌্যাব জনগনের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২। মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন পৈক্ষ্যারপাড় এলাকায় বসবাসকারী ভিকটিম রোকেয়া বেগম (৬৫) ও তার পরিবারের সাথে তাদের প্রতিবেশী মোঃ মঞ্জুর সরকারের বেশ কয়েকদিন যাবৎ জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। উক্ত বিরোধ মিমাংশার লক্ষ্যে গত ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় উভয় পক্ষের লোকজন ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগন শালিস বৈঠকে বসেন। অতঃপর তাদের মধ্যে চলমান জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ মিমাংশা করেন। বিরোধ নিষ্পত্তিকালে বিবাদীদের সীমানায় ভিকটিম রোকেয়া বেগমের একটি খড়ের পারা পড়ায় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগন উক্ত খড়ের পারাটি আগামী ২৫/০১/২০২৪ খ্রিঃ তারিখের মধ্যে সড়িয়ে নিতে বলেন। এতে রোকেয়া বেগম শালিসের সিদ্ধান্ত মেনে নেন। অপরদিনে বিবাদী মঞ্জুর উপস্থিত গন্যমান্য লোকজনদের সিদ্ধান্ত অমান্য করে এবং খড়ের পারাটি এখনি সড়িয়ে ফেলতে হবে বলে খড়ের পারাটি ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। এতে রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে মোঃ সোহেল সরকার বাধা প্রদানের চেষ্টা করলে মঞ্জুর ও তার অন্যান্য সহযোগীরা ভিকটিম রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে সোহেলকে কিল, ঘুসি, লাথিসহ কাঠের ডাসা দিয়ে এলোপাথাড়ী মারধর করতে থাকে। অতঃপর সোহেল মাটিতে লুটে পড়ে সোহেলকে বাচাঁতে সোহেলের মা রোকেয়া বেগম সোহেলের উপর সুয়ে পড়লে বিবাদীরা তাদের কাছে থাকা রাম দা দিয়ে ভিকটিম রোকেয়া বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন আশঙ্খাজনক অবস্থায় রোকেয়া বেগমকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোকেয়া বেগমকে মৃত ঘোষনা করেন। বিষয়টি গজারিয়া থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ লাশ ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।

৩। উক্ত হত্যাকাÐের ঘটনায় মৃত রোকেয়া বেগমের ছেলে মোঃ সোহেল সরকার (৩৫) বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানায় মোঃ মঞ্জুর সরকারসহ ০৪ জন ও অজ্ঞাতমানা আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-৫০/১৮৩, তাং-১০/১২/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০ দÐ বিধি। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাÐের ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র‌্যাব-১০ উক্ত হত্যাকাÐের বিষয়টি জানতে পেরে হত্যাকাÐের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

৪। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক বিকাল ১৬:৩০ ঘটিকায় র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে চাঞ্চল্যকর রোকেয়া বেগম হত্যাকাÐে সরাসরি জড়িত এজাহার নামীয় পলাতক প্রধান আসামী মোঃ মঞ্জুর সরকার (৪০), পিতা-মৃত শহিদুল্লাহ সরকার, গ্রাম-পাকসিয়ারপাড় (পৈক্ষ্যারপাড়), থানা-গজারিয়া, জেলা-মুন্সিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করে।

৫। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামী উক্ত হত্যাকাÐে তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। সে মামলা রুজুর পর হতে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল বলে জানা যায়।

৬। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর