গত ০৬ আগস্ট ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ দেশব্যাপী সহিংসতা ও সরকার পতনের উদ্ভূত সংকট পূর্ণ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে সকাল আনুমানিক ০৮:৪৫ ঘটিকায় কোনাবাড়ী থানাধীন দেওলিয়াবাড়ি সাকিনস্থ কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার এর ভিতরে থাকা কারাবন্দিরা মিলে পরস্পর যোগসাজেসে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা হাঙ্গামা শুরু করে এবং কারাগারের ভিতরে কর্তব্যরত কারারক্ষীদের মারধর ও জিম্মি করে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় কতিপয় কারাবন্দিরা কারা অভ্যন্তরে শতাব্দি কারাবন্দি ভবনের লকআপ গেইট ভাংচুর করে বের হয়ে ভবনের সিঁড়িতে লাগানো লোহার এঙ্গেল খুলে আক্রমনের হাতিয়ার তৈরি করে এবং অন্যান্য কারাবন্দিরা ভবনের লকআপ গেইট ভেঙ্গে ফেলে। এ সকল ভবনের কারাবন্দিরা ভবন থেকে বের হয়ে একত্রিত হয়ে ভাংচুর দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ঘটনার এক পর্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কারারক্ষীরা এলার্ম বাজায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না আসলে অফ ডিউটিতে থাকা কারারক্ষীগণ কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ঐ সময় কারাবন্দিদের আক্রমে প্রায় ২৫ জন কারারক্ষী আহত হয়। এমতাবস্থায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলাকালে কারাবন্দিরা বৈদ্যুতিক পিলার ভেঙ্গে মই বানিয়ে ঐদিন দুপুর আনুমানিক ১৩:০০ ঘটিকা হতে ১৪:০০ ঘটিকার মধ্যে বাউন্ডারির উপর দিয়ে কারাগারের পশ্চিম দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের আনুমানিক ৫০,০০,০০০/= (পঞ্চাশ লক্ষ) টাকার পরিমান ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার কোনাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
উক্ত ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল জেল ভেঙ্গে পলাতক কারাবন্দিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ বিকাল আনুমানিক ১৮:১৫ ঘটিকায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং র্যাব-০৮ এর সহযোগীতায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন চর কালীগঞ্জ তৈলঘাট এলাকায় একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে গত ০৬ আগস্টে দেশব্যাপী সহিংসতা ও সরকার পতনের উদ্ভূত সংকট পূর্ণ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ভাংচুর ও কারারক্ষীদের মারধর করে জেল পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মোঃ রুবেল (৩২)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ২০১০ সালে রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন আজাদ সিনেমা হলের সামনে মোবাইল চুরির বিষয়কে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত রুবেলসহ তিনজন মিলে ভিকটিমকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় রুবেলসহ তিন জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার রুজু হয়। উক্ত মামলার বিচার কার্য শেষে বিজ্ঞ আদালত ২০১৪ সালে রুবেলসহ তিনজনকে মৃত্যুদন্ড সাজা প্রদান করেন। তিনজন ব্যক্তির মধ্যে একজন কারাগার থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। একজন এখনও কারাগারে আছেন এবং আসামী রুবেলসহ কারাগারের ভিতরে থাকা বেশ কয়েকজন কারাবন্দীরা মিলে গত ০৬ আগস্টে দেশব্যাপী সহিংসতা ও সরকার পতনের উদ্ভূত সংকট পূর্ণ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে পরস্পর যোগসাজেসে উক্ত কারাগারে ভাংচুর এবং কারারক্ষীদের মারধর ও জিম্মি করে কারাগার হতে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।