আপনার হেঁচকি উঠেছে, হুট করে আপনাকে কেউ ভয় দখাল। কারণ, অনেকের ধারণা ভয় দেখালে হেঁচকি চলে যায়। যাই হোক, হেঁচকি হলো একটি রিফ্লেক্স। হেঁচকি খুবই বিরক্তিকর একটি জিনিস। এটার ওপর নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। এই কিছু সময় পর চলে যায়। কিছু মানুষের আবার দীর্ঘ সময় পর্যন্ত থাকে। কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হেঁচকি উঠতে পারে।
হেঁচকি কেন হয়?
হেঁচকির সময় শ্বাসনালিতে সামান্য খিঁচুনির মতো হয়, যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। এই সময় ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়। ফুসফুসের নিচের পাতলা মাংসপেশির স্তর থাকে। যাকে ডায়াফ্রাম বলে। হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।
যেকোনো কারণে হেঁচকি উঠতে পারে। কারণগুলো হতে পারে খুব বেশি খাবার খাওয়া, খুব দ্রুত খাবার খাওয়া, নাচা, অ্যালকোহল বা কোমল পানীয় খাওয়া। এমনকি গোসল করতে গেলে, ভয় পেলে বা মানসিক চাপে থাকলেও এর সূত্রপাত হতে পারে। এ ধরনের হেঁচকি সাধারণত ক্ষতি করে না।
যেসব হেঁচকি বন্ধ হয় না, সেগুলোতে একটু সমস্যা থাকতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, সংক্রমণ, কোনো অঙ্গের ক্ষতি হলে বা শুরুর দিকের কিছু টিউমার এবং ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ হেঁচকির সম্পর্ক থাকতে পারে। সুতরাং যদি হেঁচকি ৪৮ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কিভাবে হেঁচকি ওঠা বন্ধ করতে পারেন
এনএইচএস ইংল্যান্ড হেঁচকি উঠলে কী করণীয় সেটি নিয়ে একটি তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে আছে-
** শ্বাস-প্রশ্বাসকে কিছু সময়ের জন্য ধরে রাখা।
** একটি কাগজের ব্যাগ মুখের সামনে ধরে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া।
** হাঁটু আপনার বুক পর্যন্ত টানুন এবং সামনে ঝুঁকুন।
** বরফ-ঠাণ্ডা পানিতে চুমুক দিন।
** লেবু বা ভিনেগারের মতো কিছু কড়া স্বাদ নিতে পারেন।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল তিনটি পরামর্শ দিয়েছে। জার্নাল অফ ইমার্জেন্সি মেডিসিনে এই পদ্ধতির কথা প্রথম প্রকাশ পায়। পদ্ধতিগুলো-
** গভীর শ্বাস নিন এবং ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
** শ্বাস ছেড়ে দেওয়ার আগে বেশি করে বাতাস ছাড়ুন।
** দ্বিতীয় ধাপটি পুনরাবৃত্তি করুন এবং শ্বাস ছাড়ুন।
এই পদ্ধতিটি স্প্যাসিং ডায়াফ্রামের ওপর কাজ করে এবং সংক্ষিপ্তভাবে শরীরে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি করে হেঁচকি কমিয়ে আনে।
সূত্র : আইএফএল সায়েন্স।